ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে মাটি লুটের সময় পাহাড় ধসে পড়ে দুই শ্রমিক আহত

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী বনবিটের উচিতারবিলে এভাবে চলছে পাহাড় কাটা। আজ মাটি ধসে দুই শ্রমিকও আহত হয়।

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ঃ

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে পাহাড় কাটা থামছেই না। প্রতিদিন এই ইউনিয়নের অন্তত ১০টি পয়েন্টে পাহাড় সাবাড় করে ডাম্পার গাড়িতে করে মাটি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশ বিধ্বংসী এসব তৎপরতার বিষয়ে অবগত থাকলেও তারা কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। এই অবস্থায় পাহাড়খেকোরা দিনরাত সমানে শ্রমিক নিয়োগ করে দেদার কেটে সাবাড় করছে অসংখ্য পাহাড়।

এদিকে আজ মঙ্গলবারও উচিতারবিল মৌজার উচিতার বিলের বিশাল পাহাড় কেটে মাটি ডাম্পারভর্তি করার সময় দুই শ্রমিক আহত হন। নিচে অবস্থান করে একদল শ্রমিক ওই পাহাড়ের মাটি কাটার সময় উপর থেকে পাহাড়ের আস্ত একটি অংশ ধসে পড়লে সেখানে চাপা পড়েন তিন শ্রমিক। এ সময় অন্য শ্রমিকরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে এবং দুই শ্রমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি হয়ে তারা চিকিৎসা নেন। তবে পাহাড় খেকোরা আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন বিধায় আহত দুই শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি না রেখে দ্রুত নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যান।

আহত দুই শ্রমিক হলেন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ভেণ্ডিবাজার গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে আবুল বশর (৩০) ও নয়াপাড়ার আবুল হাসেমের ছেলে মো. জুবায়ের (২৮)।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বর্তমানে এসব পয়েন্ট থেকে পাহাড় কেটে সাবাড় এবং ডাম্পারভর্তি করে মাটি অন্যত্র নিয়ে বিক্রিতে সরাসরি জড়িত রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের গাড়ির চালক আবদুল হামিদ।

এ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিনের এক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, তাঁর বড় ভাইয়ের গাড়ির চালক আবদুল হামিদই ৫-৬টি ডাম্পার গাড়িতে করে পাহাড় সাবাড় করে অন্যত্র মাটি বিক্রিতে জড়িত রয়েছেন। একইভাবে ঘুনিয়ার টেক পয়েন্টে মাতামুহুরী নদীতে জেগে উঠা বিশাল চর থেকেও অবৈধভাবে বালু বিক্রিতে জড়িত রয়েছে আবদুল হামিদ। মুলত চেয়ারম্যানের ইন্ধনেই আবদুল হামিদ এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও সেই ভাইয়ের অভিমত।

তবে গিয়াস উদ্দিনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘পাহাড় কাটার ঘটনাও সরজমিন পরিদর্শন করার জন্য ফাঁসিয়াখালী বিট কর্মকর্তাকে পাঠাচ্ছি। এর পর পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: